***আল্লাহর দিকে আহবান***

Call To Allah

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

!!!!!এরিয়ে যাবেন না সময় নিয়ে পোস্টটি পড়ুন ।এই পোস্টটি পড়ে আপনার হেদায়েত হতে পারে!!!!!!
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার জন্য যিনি পরক্রমশালী ও পরম দয়ালু, যিনি সাত আকাশের উপরে আরশে সমুন্নত রয়েছেন, আমি তারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। তারই উপর বিশ্বাস স্থাপন করছি, তার উপরেই নির্ভর করছি এবং আমি সাক্ষ্য প্রদান করিতেছি যে আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মা’বুদ নেই, তিনি ছাড়া কেহই ইবাদত পাবার যোগ্য নয়। তিনি একক ও অদ্বিতীয়, তার কোন অংশিদার নেই। দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় নাবী মুহাম্মদ (সা:) এর উপর। যিনি সকল ইমামের প্রধান ইমাম, মানবজাতির মধ্যে একমাত্র আদর্শ দা’ঈ, কেন্দ্রিয় ব্যক্তিত্ব ও অনুসরনযোগ্য ব্যক্তিত্ব। মানবজাতিকে মুক্তি, কল্যান ও হেদায়েতের পথে আহবানের জন্য আল্লাহ তা’আলা তাকে পাঠিয়েছিলেন।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর এর অর্থ ও তাৎপর্য
“লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর ‍অর্থ হল আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মা’বুদ নেই। এর সঠিক তাৎপর্য হল ভূ-মন্ডলে ও নভোমন্ডলে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্যিকার উপাস্য নেই। কেননা মিথ্যা ও ভন্ড মা’বুদের সংখ্যা অনেক বেশি, তবে সত্যিকারের মা’বুদ হলেন একমাত্র আল্লাহ, যার কোন অংশিদারই নেই। আল্লাহর ক্ষমতায় তিনি কাউকে অংশীদার করেনে না।
”লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ” এর প্রতি দাওয়াত
প্রত্যেক রসূলগণ তাদের নিজ নিজ জাতির কাছে সর্বপ্রথম “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর প্রতি অর্থাৎ আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি ‌এবং তিনি ছাড়া অন্যের ইবাদতকে বাদ দিয়ে সকল ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য করার আহবান জানান। নাবী (সা:) সর্বপ্রথম তার সম্প্রদায়কে আল্লাহর তাওহীদের (একত্ববাদের)প্রতি আহবান করে বলেন, হে আমার জাতি (সম্প্রদায়) , “তোমরা বল আল্লাহ ব্যতিত আর কোন সত্য মা’বুদ বা উপাস্য নেই, তোমাদের জীবন সফল হয়ে যাবে”। তিনি তাদেরকে শুধুমাত্র এক আল্লাহর ইবাদত করার আহবান জানান এবং তাদের বাপ-দাদা ও পূর্বপুরুষগণ আল্লাহর সাথে যে শিরক করত, মূর্তিপূজা, পাথর,গাছ, ওলী-দরবেশ ও অন্যান্য বস্তুর ইবাদত করে আসছে তা বর্জন করতে বলেন। মুশরিকরা (আবূ জাহেল, আবূ লাহাব) নাবীজি (সা:) এই আহবান প্রত্যাখ্যান করে বলে উঠল
أَجَعَلَ الْآلِهَةَ إِلَٰهًا وَاحِدًا ۖ إِنَّ هَٰذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ
”সেকি বহু উপাস্যের পরিবর্তে এক উপাস্যের উপাসনা সাব্যস্ত করে দিয়েছে। নিশ্চয়ই এটা এক বিস্ময়কর ব্যাপার” (সূরা ছোয়াদ -৫)
কারন মুশরিকরা , মূর্তি-প্রতিমা, মাজার, ওলী-দরবেশ,গাছ,পাথর ইত্যাদির ইবাদত করত। বহু মা’বুদের ইবাদত করত। তা এই সবের নামে জবাই(কুরবানী) করত,মানত করত এবং তাদের প্রতি আপন আপন প্রয়োজন দূ:খ কষ্ট দূর করার জন্য আবেদন করত। ফলে তারা এই তাওহীদি কালিমা “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” প্রত্যাখান করে। কারন এই কালিমা আল্লাহ ব্যতিত অন্য সব বাতিল মা’বুদ বা উপাস্যকে বাতিল প্রতিপন্ন করে। তখনকার মুশরিকরা বলত যে তারা এজ জন্য মূর্তি-প্রতিমা, মাজার ,ওলী-দরবেশ,গাছ,পাথর ইত্যাদির পূজা করে যাতে তারা তাদেরকে আল্লাহ পর্যন্ত পৌছে দেবে। ঠিক আজকে আমাদের বর্তমান সমাজের মানুষরা বলে যে তারা এ পীরের কাছে মুরিদ হয়, মাজারে সিজদা করে, মানত করে,ওলী-দরবেশ, মাজারওলাকে ডাকে যে তারা আল্লাহ পর্যন্ত পৌছে দেবে বা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করিয়ে দিবে। অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন
وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدْعُونِىٓ أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ
”তোমাদের পালনকর্তা বলেন ,তোমরা আমাকে ডাক আমি (তোমাদের ডাকে) সাড়া দিব।”(সূরা গাফির-৬০)
অর্থ্যাৎ সোজা আল্লাহকেই ডাকতে হবে, আল্লাহর কাছেই মনের আশা-আকাংখা পেশ করতে হবে কোন প্রকার ভায়-মাধ্যম ছাড়াই। যে ব্যক্তি এক আল্লাহর কাছে নিজের ইচ্ছাকে আত্বসমর্পন করে সেই প্রকৃত মুসলিম। মুসলিম সেই ব্যক্তি যে আল্লাহ পাকের একত্বে বিশ্বাস রাখে এবং যাবতীয় ইবাদত অন্য কারো পরিবর্তে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করে,তারই জন্য সালাত (নামায), সিয়াম (রোযা) পালন করে, তাকেই ডাকে, তারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে,তারই উদ্দেশ্য মানত করে ও কুরবানী করে। এইভাবে সকল প্রকার ইবাদত আল্লাহর প্রতিই নিবেদেন করে।একজন মুসলিম ব্যক্তির দৃঢ় বিশ্বাস এই হয় যে আল্লাহ পাকই কেবল সকল প্রকার ইবদাতের যোগ্য।তিনি ব্যতিত আর কেউ এর হকদার নেই । চাই সে হোক নাবী, ওলি, পীর,গাউছ,কুতুব,আবদাল,মাজারওয়ালা.খাজাবাবা,গাছ,পাথর,জ্বীন,মালাইকা বা অন্য কিছু, এরা কেউ ইবাদতের যোগ্য হতে পারে না।
”লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলার ফযিলত

সাহাবী উবাদা বিন সামিত (রা:) থেকে বণিত। তিনি বলেন আল্লাহর রসূল (সা:) বলেছেন, ”যে ব্যক্তি সাক্ষ্য প্রদান করলো যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই।তিনি একক।তার কোন শরীক নেই। মুহাম্মদ (সা:) তাঁর বান্দা ও রসূল। ঈসা (আ) আল্লাহর বান্দা ও রসূল। তিনি তার এমন এক কালিমা যা তিনি মারিয়ম(আ)এর প্রতি প্রেরণ করেছেন এবং তিনি ত‍ার পক্ষ থেকে প্রেরিত রুহ বা আত্বা। জান্নাত সত্য,জাহান্নাম সত্য।সে ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা জান্নাত দান করবেন,তার আমল যাই হোক না কেন”।(বুখারী,হাদিস নং-২৮,মুসলিম)
উতবান (রা:) কতৃক হাদিসে বর্ণিত আছে,রসূলুল্লাহ(সা:) বলেছেন, নিশ্চয় যেই ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এ কালিমা পড়ে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায় নিশ্চয় আল্লাহ তা’য়ালা সেই ব্যক্তির জন্য জাহান্নামের আগুনকে হারাম করে দিবেন।” (বুখারী ও মুসলিম)
আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়ার ফযীলত
আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়া ও তাবলীগ করার ফযিলত ও সওয়াব অফুরন্ত ও অনেক বেশী।
আল্লাহ সুবহানাহ তায়ালা বলেন,
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
”তার কথার চেয়ে উত্তম কথা আর কি হতে পারে? যে ‍আল্লাহর দিকে আহবান করে,সৎ আমল করে এবং বলে আমি একজন মুসলিম (আত্বসমর্পনকারী)” (সূরা: হা-মিম আস-সাজদাহ ৪১:৩৩)
দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু কাজ করা হয় তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ও ভাল কাজ হচ্চে পথহারা মানুষকে আল্লাহর পথে এবং সত্য পথের দিকে আহবান করা। মহান আল্লাহর বাণী
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
”আর আমি জ্বিন ও মানুষকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্যই সৃস্টি করেছি”।(সূরা আযযারিয়াত:৫৬)
অর্থ্যাৎ আল্লাহ ত’আলা আমাদেরকে শুধুমাত্র তারই ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন ভিন্ন কোন উদ্যেশ্য নয়। আজকের সমাজের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই মানুষ আল্লাহর ইবাদতকে বাদ দিয়ে বিভিন্ন পীরভন্ড-বাবা,খাজা বাবা,বাবা ফরিদপুরী,বাবা মাইজভান্ডারী,শাহজালাল-শাহপরান,মুশকিল কুসা,গাওছে তেরাবান্দানেওয়াজ,খাজা নেওয়াজ,গাজী-কালু,গরিবে নেওয়াজ,মুশকিলে আসান,কচ্ছপ,গজাল মাছ,গাছ,ন্যাংটা বাবা,কবর/মাজারের, জ্বীনের ইবাদত করছ কেউবা মাজারে গিয়ে সিজদা করছে,মানত করছে,সন্তান না হওয়ায় দেওয়ানবাগী,কুতুববাগীর কাছে চলে যাচ্ছে। অথচ আল্লাহ ত’আলা শুধুমাত্র তার ইবাদতের জন্যই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন।সকল চাওয়া একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে মনের আশ-আকাংখা শুধুমাত্র আল্লাহই পূরণ করতে পারেন অন্য কেউ নয়। আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ ۖ
”আর আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে এ মর্মে একজন রসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত থেকে দূরে থাক”। (সূরা আন-নাহাল:৩৬) অর্থাৎ আল্লাহ ত’আলা প্রত্যেক মানব জাতির কাছে রসূল বা নাবী পাঠিয়েছেন এ জন্য যে মানুষ শুধুমাত্র একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাগুত বা সীমল্ঘনকারী থেকে দূরে থাকবে।
গাইরুল্লাহ কাকে বলে?
এক কথায় আল্লাহ ছাড়া যারই ইবাদত করা হয় এবং তাতে সে সন্তুষ্ট থাকে তাকে গাইরুল্লাহ বলে।
আল্লাহ বলেন,
وَلَا تَدْعُ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ ۖ فَإِن فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِّنَ الظَّالِمِينَ [١٠:١٠٦]
”আর আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে অন্যকে ডেকো না যে তোমার উপকারও করে না ও অপকারও করে না, কেননা তুমি যদি তা করো তাহলে তুমি তো সে ক্ষেত্রে ‍অন্যায়কারীদের মধ্যেকার হবে”।( সূরা ইউনুস আয়াত:১০৬)
বর্তমান সমাজে মানুষের মধ্যে গাইরুল্লাহ হলো সকল পীর-ভন্ডরা (দেওয়ানবাগী,কুতুববাগী,গাউছুলআযম,ফরিদপুরী,মাইজভান্ডারী,চন্দ্রপুরী,আটরশি,জৈনপুরী) মাজারওয়ালা,গণক ও ভবিষ্যৎবক্তা,জ্বীন বশকারী,যাদুকর,মাজার,ইসলাম বিদ্বেসী সরকার ইত্যাদি। সবচেয়ে বড় গাইরুল্লাহ হলে ইবলিস শায়তান।পীর-মুরিদী মূলত একধরনের ধর্মব্যবসা। বিনা পুজির ব্যবসা হল পীর-মুরিদী ও মাজারের ওরস ব্যবসা।ইসলামে পীর-মুরিদীর কোন স্থান নেই। পীরদের মধ্যে হক্কানী আর বাতিল পীর বলতে কিছুই নেই। সব পীরই ভন্ড। ইসলামে পীর-মুরিদী বলতে আলাদা কোন উসুল নেই।ইসলামের ইতিহাসে ৪০০ হিজরির মধ্যে কোন পীল ছিল না। আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا ۖ
”আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তার সাথে কোন কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে না”। (সূরা ‍আননিসা-৩৬)
অর্থাৎ আমাদেরকে শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত করতে হবে এবং আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার বা সমকক্ষ বানানো যাবে না। ইসলাম এসেছে মানুষকে মানুষের গোলামী থেকে বের করে এক আল্লাহর গোলামী করার জন্য।
শিরক কাকে বলে?
বিশ্বাসগতভাবে,আমলগতভাবে আল্লাহর সাথে ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্য কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে আল্লাহর অংশিদার/সমতুল্য বা সমান বানানোকে/করাকে শিরক বলে।
সাহাবী জাবির (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে রসূল (সা:) বলেছেন, “ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক না করে মৃত্যু বরণ করবে,সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যাক্তি তারঁ সাথে কাউকে শরিক করে মৃত্যু বরণ করবে সে জাহান্নামে প্র্রবেশ করবে।” (সহিস মুসলিম হাদিস নং-৯৩) শিরক হচ্ছে সকল পাপের চাইতে বড় পাপ। যা আল্লাহ তা’আলা যা কক্ষনো ক্ষমা করবেন না। যদি কোন ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করে মারা যায় তাকে চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকতে হবে। শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, যে শিরক মানুষের সব আমাল নস্ট করে দেয়, মানুষকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয়।
মহিয়ান গরিয়ান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا [٤:٤٨]
”নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তার সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা ‍করেন। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদাহ-৭২)
আল্লাহ তা’আলা তার প্রিয় নাবীকে সাবধান করে বলেন,
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
”আপনারর কাছে ওহী করেছি আর আপনার পূর্বে যারা এসেছিল তাদেরকেও ওহী করেছি এই মর্মে যে, তুমি যদি শিরক কর তবে অবশ্যই তোমার আমাল ধ্বংস হয়ে যাবে। ‍‌আর নিংসন্দেহে তুমি ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে”। (সূরা যুমার-৬৫) অতএব এ আয়াৎ থেকে আমরা জানতে পারি নাবী (সা:) যদি শিরক করতো তাহলে তার সমস্ত আমল ধ্বংস হয়ে যেত অতএব আমরা উম্মতরা কোথায় আছি। সুতরাং শিরক থেকে সাবধান, শিরক থেকে সাবধান, শিরক থেকে সাবধান। হে আল্লাহ, হে বিশ্বজগতের পালকর্তা তোমার কাছে আমরা যাবতীয শিরক থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমীন। ছুম্মা আমীন।

আমাদের সমাজে প্রচলিত শিরক
আমাদের সমাজে যে সকল শিরক প্রচলিত রয়েছে তা হল: গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হওয়া, মাজারকে সিজদা করা, ওলী ও মাজার দরবারে গিয়ে সন্তান কামনা করা, মাজারের নামে মানত করা, মাজারে মোমবাতী ও আগড়বাতী জ্বালানো,মৃত ব্যক্তির কাছে চাওয়া,কবরের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা,কবরের চারদিকে প্রদক্ষিন করা, কবরের মাটি দিয়ে বরকত হাসিল করা,কবরে গিলাব জরানো,কবরবাসীদের কাছে নযর-মানত পেমকরা,আব্দুল কাদের জিলানী(রহ) শাহ জালাল(রহ) শাহ পরান(রহ) প্রমুখ ব্যক্তির কাছে উদ্ধার কামনা করা,পীরকে নাজাতের ওসীলা মনে করা, পীরের কাছে মাথানত করা,পীরের কাছে বায়য়াত হওয়া,পীর-বাবার নামে পশু কুরবানী করা,মৃত পীরের কচ্ছপ,গজার,কবুতর ইত্যাদিকে বিশেষ মর্যাদানবান ও ক্ষমতাশালি মনে করা,ওরস করা,মিলাদে ক্বিয়াম করা,জ্বীনের কাছে নৈকট্য লাভের আশায় পশু কুরবানী করা,ভাগ্য ফিরানের জন্য গাছে সুতা দিয়ে গিরা দেয়া,টিআ পাখি দিয়া ভবিষ্যৎ জানতে চাওয়া,গনকের কাছে ভবিষ্যৎ জানতে চাওআ,জাদুকরের কাছে সাহায্য চাওআ,ফেরেশতাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, আল্লাহ ব্যতিত অন্যের নামে কছম করা, পহেলা বৈশাখে মূর্তি বানানো,মূর্তি বা ছবির কাছে মাথা নত করা, মূর্তি পূজা করা,মঙ্গল শোভাযাত্রা করা,নক্ষত্রের ওসিলায় বৃষ্টি কামনা করা,আগুনের সামন মাথা নত করা,শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা,১ মিনিটি নিরবতা পালন করা,গণতন্ত্র মেনে চলা,তাগুদি সংবিধানকে আল-কোরআনের চেয়ে মর্যাদাশীল মনে করা, প্রচলিত গনতান্ত্রিক আইন শাস্ত্র মেনে নেওয়া,আগুনের কাছে মাথা নত করা, তাবিয-কবজ ঝুলানো,পাথরের আংটি পরিধান করা,শায়তান ও জ্বীন অনিস্ট করতে পারে বলে তাদেরকে ভয় করে চল।
কোন ‍কোন বাতেনী ও সুফীবাদের এই বিশ্বাসযে তথকথিত ওলী এ সৃস্টি জগতের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রনে আল্লাহর শরীক রয়েছেন। ত‍ারা তাদেরকে কুতুব,ওতদ,গাওস নামে অভিহিত করেন। আল্লাহর প্রভূত্ব এটি একটি জঘন্যতম শিরক। যে ব্যক্তি শিরকে লিপ্ত হয়েছে শিরক তার যাবতীয় সৎ আমাল (নামাজ,রোজা,হজ্জ,যাকাত,জিহাদ,দান,ছদকা) কে বিনস্ট করে দিয়েছে। তার সমস্ত আমল চাই তা যত বড়ই হোক না কেন তা বরবাদ(নষ্ট )হয়ে যাবে।অতএব শিরক থেকে দূরে থাকুন জান্নাতের পথকে সহজ করুন।
মূল কথা হল ভয়, ভালবাস,শ্রদ্ধানিবেদন, প্রার্থনা,প্রত্যাবর্তন, ও একনিষ্ঠতা এ সমস্ত বিষয়ে মন ও প্রাণকে একমাত্র আল্লাহর দিকে নিবন্ধ করা,আল্লাহর সন্তুস্টির জন্য করা। আল্লাহর জন্যই কাউকে ভালবাসা,আবার আল্লাহর জন্যই কাউকে ঘৃণা করা। আল্লাহর বাণী

قُلْ هَـٰذِهِۦ سَبِيلِىٓ أَدْعُوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ ۚ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا۠ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِى ۖ وَسُبْحَـٰنَ ٱللَّهِ وَمَآ أَنَا۠ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ [١٢:١٠٨]
”বলে দিন এটাই আমারপথ। আমি বুঝে সুঝে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেই আমি এবং আমার অনুসারীরা। আল্লাহ পবিত্র । আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।” (সূরা ইউসুফ-১০৮)
অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহর দিকে আহবান করতে হবে অন্য কারো দিকে নয় জেনে বুঝে যাচাই করে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস করে একমাত্র আল্লাহর ইবাদতের দিকে দাওয়াত দেয়াই হচ্ছে প্রকৃত তাবলীগ।
আবূ হুরায়রা (রা:) বলেন। রসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন “হে মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমা, তুমি আমার কাছে যা চাও তা চেয়ে নেও। আমি তোমাকে আল্লাহর আযাব থেকে বাচাতে পারব না । (সহীহ মুসলিম হা: নং-৪১১ এর অংশবিশেষ)
আল্লাহ তা’আলা বলেন, “সেদিন কোন ব্যাক্তি অপর কোন ব্যক্তির জন্য কোন কিছু করার ‍অধিকার রাখবে না। সেদিন সমস্ত কর্তৃত্ব থাকবে একমাত্র আল্লাহর”। (সূরা ইনফিতার:১৯) কি অবস্থা হবে এইসব পীর-ভন্ডদের যারা বলে মুরীদদের নিয়ে জান্নাতে যাবে?

মুক্তিপ্রাপ্ত দল বা কোন দলটি জান্নাতে যাবে?
আল্লাহ তা’আলা বলেন
مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا ۖ كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ [٣٠:٣٢]
“তোমরা মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যেও না, যারা দ্বীনকে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে এবং যারা দলে দলে বিভক্ত ছিল, প্রত্যেক দল তাদের কাছে যা আছে তাই নিয়েই খুশি”। (সূরা রূম, আয়াত ৩১-৩২)
আমাদের নাবী(সা) বলেছেন, ”ওহে, অবশ্যই তোমাদের পূর্বে যার ছিল (ইহুদি ও খ্রিস্টান) তারা ৭২ দলে ভেঙ্গে গিয়েছিল এবং অবশ্যই আমার এ উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। তার মধ্যে ৭২ দলই জাহান্নামী এবং একদল জান্নাতী। তারা হল মুসলিমদের দল” (আহমদ,হাসান)
অন্য হাদিসে আছে: “একমাত্র আমি(অর্থাৎ নাবী সা:) এবং আমার সাহাবীদের (চার সাহাবী) যারা অনুসরন করে তারা ছাড়া সবাই জাহান্নামী।”(তিরমিযি)
অর্থাৎ একমাত্র যারা রসুলুল্লাহ (সা:) ও তার চার সাহাবীদেরকে অনুসরন করে তারাই জান্নাতী বাকী সব জাহান্নামী।
রসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, ‍”তোমাদের মধ্যে আমি দু’টো জিনিস রেখে যাচ্ছি যদি তাদের আকড়ে ধর তবে কখনও পথভ্রষ্ট হবে না। তা হলো আল্লাহর কিতাব (অর্থা‍ৎ আল-কোরআন) এবং আমার সুন্নাহ (অর্থাৎ আল-হাদীস) এবং যারা তাদের আকড়ে ধরবে তা তাদেরকে আলাদা করবে না, যে পর্যন্ত না আমার হাউজে কাউসারে পানি পান করবে।” (ছহীহ, জামে সগীর)
অতএব উপরোক্ত হাদিসের আলোকে আমরা বুঝতে পারলাম যে দলটি জান্নাত যাবে তারা হল আল-কোরআন ও সহীহ হাদিস অনুযায়ী যারা চলবে।
সুতরাং হে মুসলিম, ভাই ও বোনেরা যারা বিভিন্ন বিভ্রান্তির জালে জড়িয়ে আছেন আসুন আমরা নিজেদেরকে সংশোধন করি। সত্য এসেছে মিথ্যার বিলুপ্তি ঘটবে ইনশাআল্লাহ। ইসলাম সম্পর্কে নিজে জানি অন্যকে জানাই। প্রকৃত ইসলামকে বুঝার চেষ্টা করি। আল-কোরআন ও সহীহ হাদিস পড়ি সুন্দর জীবন গড়ি।
তাই আসুন সকল প্রকার দল,পথ,মত,তরিকা,ইজম,ফিরকা,পীর-ফকির,নামধারী ওলী-দরবেশ,মাজার ত্যাগ করে এক আল্লাহর (আল কোরআন ও সহীহ হাদীসকে) রজ্জুকে শক্ত করে আকড়ে ধরুন তাহলেই হক্বের পথে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন এবং জান্নাতের পথকে সহজ করতে পারবেন। নাবী (সা:) এর তরীকা ব্যতিত অন্য কোন তরিকায় মুক্তি নেই এবং মুক্তি হবেও না।
হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থেকো আমি সত্য পৌছেয়েছি, হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থেকো আমি সত্য পৌছেয়েছি, হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থেকো আমি সত্য পৌছেয়েছি!!!
আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা ‍আমাদের সবাইকে তার ইবাদত করার তাওফিক দান করুক আমীন, ছুম্মা আমীন।…………….
কপি পেস্ট ও শেয়ার করে সবাইকে জানিযে দিন।………………..

tagged: আল্লাহর দিকে আহবান ,

allahordikeahban.wordpress.com

শায়খ জসীম উদ্দিন রহমানীর অডিও লেকচার

Leave a comment