দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্ব – ২য় পর্ব

580334_772578256209362_4014385139971900508_n.jpg

দাজ্জাল ও চতুর ইয়াহুদী জাতি

বর্তমান হলো ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি। আমাদের শুধু ঘটনা প্রবাহ মিলিয়ে দেখতে হবে। আমরা ইতিহাসের যত গভীরে যাবো, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ততো বেশি অনুমান করতে পারবো। আর দাজ্জাল কে জানতে হলে আমাদের অবশ্যই ইয়াহুদী সম্পর্কে জানতে হবে। ইব্রাহীম (আ)’র দুই সন্তানে মধ্যে মুসলিমরা হলো ইসমাইল (আ)’র বংশধর আর ইয়াহুদীরা হলো ইসহাক(আ)’র বংশধর।

আল্লাহ ইসমাইল (আ) কে বর্ণনা করেছেন ‘হালিম’ শব্দ দ্বারা মানে নম্র ও ধৈর্যশীল হিসেবে আর ইসহাক (আ) কে বর্ণনা করেছেন ‘আলিম’ শব্দ দিয়ে অর্থাৎ জ্ঞানী, অভিজ্ঞ, কুশলী। আল্লাহ ইয়াহুদীদের কে বেশ জ্ঞান ও চতুরতা দিয়েছেন তাই তারা স্বল্প হয়েও অন্যান্য জাতি থেকে আলাদা।

ইয়াহুদীদের চাতুরির একটি নমুনা দেখুন তারা ইসা (আ) কে পরীক্ষা করার জন্য জিজ্ঞেস করলো “এটা কি বৈধ হবে যে আমরা সিজার (রাজা) কে কর (Tex) দিব?” (Matthew 22:17)

প্রশ্নটা অনেক চাতুরির ছিল তারা জানতো কোন নবী কর দেয়াকে বৈধ বলবে না তাই যদি ইসা (আ) এটাকে বৈধ বলেন তবে তিনি প্রত্যাশিত নবী নন আর যদি তিনি অবৈধ বলেন তবে তারা সিজার কে গিয়ে বলে দিবে আমরা কর দিব না কারন ইসা (আ)বারন করেছেন। অর্থাৎ উভয় দিক দিয়েই চাতুরি। আর যেহেতু ইসা (আ) ও একজন ইয়াহুদী ছিলেন সেই হিসেবে আল্লাহ উনাকেও দিয়েছেন জ্ঞান, তাই ইসা (আ)পাল্টা প্রশ্ন করলেন তোমারা যে টাকা সিজারকে দাও সেটা তো সিজারেরই, তাই তার টাকা তাকে দিলে দোষ কি?

যাইহোক দাজ্জাল হলো ইয়াহুদীদের প্রত্যাশিত মাসীহা। ইয়াহুদী ধর্ম গ্রন্থ তালমুদে আছে দাউদ (আ) এর বংশধর একজন মাসীহা আসবে যিনি সুলাইমান (আ)’র মত হাইকলে বসে সমগ্র দুনিয়া শাসন করবে ও সেই শাসন হবে অনন্তকাল ধরে সেই সময় খাদ্য শস্য এবং পোষাকে বিশ্ব ভরে যাবে। সেদিন প্রত্যেক ইয়াহুদী’র ২৮০০ করে সেবক থাকবে।

ইয়াহুদীরা সেই সোলাইমান (আ) পর থেকেই তাদের মাসীহের অপেক্ষায় ছিল। কিন্ত যখন সত্য মাসিহা হিসেবে ইসা (আ)’এর আগমন হল, উনার এত মজেজা দেখেও ইয়াহুদীরা ঈমান আনলোনা। বরং তারা বলতে লাগলো ইসা (আ) সত্য মাসিহ নয় কারন তিনি জেরুজালেম কে রোমানমুক্ত এবং প্রত্যাশিত ভাবে পুরো দুনিয়া শাসন করলেন না। তারপর তারা উনাকে ক্রুশবিদ্ধ করার চেষ্টা করলো আর যখন আল্লাহ উনাকে উঠিয়ে নিলেন তখন বলতে লাগলো দেখেছো সেতো মরে গেছে সে আমাদের কাঙ্ক্ষিত মাসীহ নয়।

যেহেতু দাজ্জাল থাকবে মাত্র ১ বছর ২ মাস ১৪ দিন (৩৬৫+৩০+৭+৩৭=৪৩৯ দিন), আর এই সময়েই তাকে তার ফিতনা (ধোকা)’র সর্বোচ্চ সীমায় গিয়ে দুনিয়ার বেশীর ভাগ মানুষকেই গুমরাহ করতে হবে সেহেতু দাজ্জালের আগমন প্রত্যাশী ইয়াহুদীরা দাজ্জালের আসার আগেই তার জন্য ষ্টেজ তৈরি করতে উঠে পরে লেগেছে, যাতে কাঙ্ক্ষিত দাজ্জাল এসে তার সোলাইমানী মাসনাদে বসে ইয়াহুদীদের জন্য Golden age (সোনালী যুগ) নিয়ে আসতে পারে। ৭০ সালে ব্যাবীলন কর্তৃক জেরুজালেম থেকে ইয়াহুদীদের বিতাড়িত হওয়ার পর থেকে ইয়ায়হুদীরা এই স্টেজ তৈরির কাজ করতেছে অর্থাৎ দীর্ঘ ২ হাজার বছর যাবত।

যেহেতু দীর্ঘ দিন যাবত সেখানে সোলাইমান (আ)’র মসনদ/আসন নেই, ইয়াহুদীদের শাসন নেই এমনকি ইয়াহুদীরা সেখান থেকে বিতারিত ঠিক সেই অবস্থাই কিভাবে দাজ্জাল এসে সোলাইমান (আঃ) এর মত ইসরাইলে বসে রাজত্ব করতে পারবে?

তাই ইয়াহুদীরা সেই পথ আরও সুগম করে সোলাইমান (আ)’র মসনদ কায়েম করতে চেষ্টা করছে। আর সেটা করতে হলে তারা ধাপে ধাপে কিছু লক্ষ্য পূর্ণ করে যাচ্ছে-

১. জেরুজালেম কে জেন্টাইল (অইয়াহুদী) শাসন থেকে মুক্ত করতে হবে।

২. সেখানে সকল ইয়াহুদীদের একত্র করতে হবে ঠিক যেমন সোলাইমান (আ)এর সময় ইয়াহুদীরা সেখানে একত্রে বসবাস করত।

৩. দাউদ (আ)কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসরাইল রাস্ট্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।

৪. সোলাইমান আঃ এর সময় ইসরাইলের মানচিত্রে ইসরাইল যত বড়ছিল (Greater Israel) তত বর হতে হবে, Temple of Solomon means হাইকল নির্মাণ করতে হবে

৫. ইসরাইল কে পুরা দুনিয়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর হতে হবে ঠিক যেভাবে সোলাইমান (আ)’র সময় ছিল।

এখন বর্তমানে দিন যত যাচ্ছে ইয়াহুদীদের জাতি হিসেবে সাফল্য ততো বাড়ছে এবং তাই এত বছর পর তারা তাদের প্রত্যাশিত মাসীহের আগমন খুব সন্নিকটে মনে করছে।

This entry was posted in Uncategorized. Bookmark the permalink.

Leave a comment