সত্যিই দাজ্জাল এর সময় এসে গেছে ??

download.jpg

 

সত্যিই দাজ্জাল এর সময় এসে গেছে ??
.
ধেয়ে আসছে চুড়ান্ত যুদ্ধ
.
তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ এবং দাজ্জাল প্রকাশ কি খুব সন্নিকটে? ব্যাখ্যা হাদীস অনুসারে-
.
দাজ্জালের হাতে যুবক হত্যা হবার হাদিস ও ২০০৪ সালে এক শিশুর জন্ম।
.
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে বুসর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন, “মহাযুদ্ধ ও কুস্তুন্তুনিয়া (ইস্তাম্বুল) জয়ের মধ্যখানে সময় যাবে ছয় বছর। সপ্তম বছরে দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করবে”। (ইবনে মাজা, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৭)
.
নবীজি (সাঃ) বলেন, ‘দাজ্জাল দুনিয়াতে অবস্থান করবে চল্লিশ দিন। প্রথম একটি দিন এক বছরের সমান হবে। দ্বিতীয় দিনটি এক মাসের সমান হবে। তৃতীয় দিনটি এক সপ্তাহের সমান হবে। অবশিষ্ট দিনগুলো সাধারণ দিনের মতো হবে’। (সহিহ মুসলিম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২২৫০)
.
অর্থাৎ ৩৬৫+৩০+৭+৩৭=৪৩৯দিন।

.

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদি: হ‌তে বর্ণিত নবী করীম সা: ইরশাদ করেছেন, ‘দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করলে ঈমানদার ব্যক্তিদের মধ্যে এক যুবক তার কাছে যাবে। তার সাথে দাজ্জালের প্রহরীদের দেখা হবে। তারা তাকে বলবে, ‘কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা করছো’? যুবক বলবে, ‘আমি এই আবির্ভূত ব্যক্তির কাছে যেতে ইচ্ছা করছি’। প্রহরীরা বলবে, ‘আমাদের রবের প্রতি কি তোমাদের ঈমান নেই’? সে বলবে, ‘আমাদের রবের ব্যাপারে তো কোনরূপ গোপনীয়তা নেই’। তারা বলবে, ‘একে হত্যা কর’। কিন্তু এদের মধ্যে কেউ কেউ বলাবলি করবে, ‘তোমাদের রব কি তোমাদেরকে তার অগোচরে কোন ব্যক্তিকে হত্যা করতে নিষেধ করেননি’? সুতরাং তারা তাকে দাজ্জালের কাছে নিয়ে যাবে। যখন মু’মিন ব্যক্তি দাজ্জালকে দেখবে তখন বলবে, ‘হে লোক সকল! এই তো সেই দাজ্জাল যার প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে গেছেন’। এরপর দাজ্জালের নির্দেশে তার দেহ হতে মাথা বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। তার পেট ও পিঠ উন্মুক্ত করে পিটানো হবে আর বলা হবে, ‘তুমি কি আমার প্রতি ঈমান স্থাপন কর না’? উত্তরে মু’মিন ব্যক্তি বলবে, ‘তুমিই তো সেই মিথ্যাবাদী মাসীহ দাজ্জাল’। সুতরাং তার নির্দেশে মু’মিন ব্যক্তির মাথার সিঁথি হতে দু’পায়ের মধ্য পর্যন্ত করাত দিয়ে চিরে দু’টুকরা করা হবে। দাজ্জাল তার দেহের এ দুই অংশের মধ্য দিয়ে এদিক হতে ওদিকে গমন করবে। এরপর সে মু’মিন ব্যক্তির দেহকে সম্বোধন করে বলবে, ‘পূর্বের মত হয়ে যাও’। তখন সে আবার পরিপূর্ণ মানব হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এবার দাজ্জাল বলবে, ‘এখনকি তুমি ঈমান পোষণ কর?
.
‘মু’মিন যুবকটি বলবে, ‘তোমার সম্পর্কে এখন আমি আরো প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম’। সে মানুষদেরকে ডেকে বলবে, ‘হে মানব মণ্ডলী! আমার পর এ আর কারো কিছু করতে পারবে না’। দাজ্জাল পুনরায় তাকে হত্যা করতে চাইবে। কিন্তু আল্লাহ তার ঘাড়কে গলার নিচের হাড় পর্যন্ত পিতলে মুড়িয়ে দেবেন। ফলে সে তাকে হত্যা করার আর কোন উপায় পাবে না। বাধ্য হয়ে সে তার দু’হাত ও দু’পা ধরে ছুঁড়ে ফেলবে। মানুষ ধারণা করবে দাজ্জাল তাকে আগুনে নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সে বেহেশতে নিক্ষিপ্ত হবে। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘এই ব্যক্তি বিশ্ব জগতের রব আল্লাহর কাছে মানবদের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত স্তরের শহীদের মর্যাদা লাভ করবে’। (মুসলিম শরিফ)
.
এখন আপনাদেরকে আমি একটি বিস্ময়কর ঘটনা জানাতে চাই। গত ২০০৮ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী প্যালেস্টাইনের টিভি চ্যানেল আল আকসা (Al Aqsa TV) তে সেখানকার একজন আলেম ঈসা বাদওয়ান এক সাক্ষাতকারে এক বিস্ময়কর তথ্য দেন। যা নিশ্চিতভাবে মুসলিম জাহানের জন্য ভাবার বিষয় এবং সতর্কবার্তা। এখানে সাক্ষাতকারের অংশটি তুলে ধরছি।
.
ঈসা বাদওয়ানঃ একজন লোক, যাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি এবং বিশ্বাস করি, সঙ্গত কারণেই আমি তার নাম বলতে চাচ্ছি না– তো তিনি একদিন রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে একজন বৃদ্ধ স্ত্রীলোক তাকে থামালো এবং ঐ স্ত্রীলোককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করল। কারণ, ঐ বৃদ্ধার মেয়ে ঐ হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেছে। লোকটি ঐ বৃদ্ধার অনুরোধটি রাখল এবং তাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে হাসপাতালের বাইরে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করল। এক ঘণ্টা পরে ঐ বৃদ্ধা তার মেয়ে এবং মেয়ের নবজাতক শিশু পুত্রকে নিয়ে বের হয়ে গাড়িতে উঠল। যখন তারা গাড়িতে উঠল, তখন ঐ নবজাতক সবাইকে অবাক করে দিয়ে সালাম দিল। আমরা অবাক হয়ে সালামের উত্তর দিলাম।

.

সাক্ষাতকার গ্রহণকারীঃ নবজাতক কথা বলে উঠল?

.

ঈসা বাদওয়ানঃ হ্যাঁ, নবজাতক শিশুটি। এবং আমরা এটা শায়খ নিজারসহ অন্যান্য আলেমকে জানিয়ে ছিলাম তখন। তো লোকটি যা বলল তা হল যে, শিশুটি বলল, “আমিই হলাম সেই বালক যাকে দাজ্জাল হত্যা করবে, এরপরে আর কাউকে সে হত্যা করতে পারবে না।”
.
এবং আমরা হাদিস থেকে জানি যে, দাজ্জাল যাকে হত্যা করে জীবিত করবে এবং আবার হত্যা করবে কিন্তু পরে আর জীবিত করতে পারবে না। সে হবে একজন যুবক। যাকে শ্রেষ্ঠ শহীদ বলা হয়েছে। আর যুবক বলতে ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সকেই বুঝায়। আমি মনে করি, এই ঘটনা আমাদের জন্য অনেক খুশির খবর বহন করে। কারণ, আমরা হাদিস থেকে জানি যে, দাজ্জালের আগমন ঘটবে ইমাম মাহদির উপস্থিতিতে ইস্তাম্বুল জয়ের পর।
.
সাক্ষাতকার গ্রহণকারীঃ এখন সেই বাচ্চার কি অবস্থা?

.

ঈসা বাদওয়ানঃ হ্যাঁ, এখন আমরা আলেমরা তাকে চিনি। এবং আমরা তার খেয়াল রাখছি। আমি সব মানুষকে এবং সব আলেমদেরকে জানাতে চাই যে, বিজয় অতি নিকটে। ইমাম মাহদি হয়তো এখন আমাদের মাঝেই অবস্থান করছে (এই বাচ্চার জন্মের উপর ভিত্তি করে) ইনশাআল্লাহ। প্যালেস্টাইনবাসী, খুব শিগগিরই এ বিজয়ের সাক্ষী হবে এবং এই ধর্মকে (ইসলামকে) ও এর আলোকে ছড়িয়ে দিবে। (সাক্ষাতকারের অংশ বিশেষ শেষ)

.

এই শিশুটির জন্ম হয় ২০০৪ সালে। আর উদ্বিগ্নের বিষয় হল, ২০০৮ সালে এই সাক্ষাতকার জন সম্মুখে প্রকাশ হবার কয়েক মাস পর ২০০৮/২০০৯ সালে ইসরাইল রাসায়নিক গ্যাস প্রয়োগ ও বোম্বিং শুরু করে ১৪০০ শিশু হত্যা করে এবং প্রায় ৪০০০ শিশুকে আহত করে। শুধু তাই নয়, ইসরাইল এই সাক্ষাতকারে উল্লেখিত আলেম শেখ নিজারকে হত্যার উদ্দেশ্যে সাক্ষাতকারের ১১মাস পরে এফ ১৬ বিমান দিয়ে ২০০০ পাউন্ডের বোমা নিক্ষেপ করে। যার ফলে শায়খ নিজার তার চার স্ত্রী ও এগার সন্তানসহ শহীদ হন। শ‌ায়খ নিজার ছিলেন গাজার অন্যতম প্রভাবশালী আলেম। তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইমাম সাউদ বিশ্ববিদ্যালয় হতে দ্বীনশিক্ষা লাভ করেন। এর পাশাপাশি তিনি ইসরাইলের সাথে যুদ্ধরত ‘আল কাসসাম মুজাহিদ ব্রিগেডের’ একজন দায়িত্বশীল কমান্ডারও ছিলেন।

.
.
যদি ২০০৪ জন্ম গ্রহণকারী এই বাচ্চাই যদি সেই সে যুবক হয়, তবে সে ২১ থে‌কে ২৫ বছর বয়সী যুবক হবে ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালে। দাজ্জাল দুনিয়াতে আত্মপ্রকাশের পর ৪৩৯ দিন বা এক বছরের একটু বেশি সময় অবস্থান করবে এবং এই সময়ের মধ্যে যুবককে হত্যা করবে। মহাযুদ্ধের সপ্তম বছরে যেহেতু দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ হবে, তাতে মহাযুদ্ধের সম্ভাব্য সাল আসে ২০১৮ থেকে ২০২২। আর মহাযুদ্ধ ইমাম মাহদির উপস্থিতিতেই হবে। যা হোক, এগুলো সবই শুধু ঐ বাচ্চার দাবীর উপর ভিত্তি করে হাদিসের মাধ্যমে গণনা। কিন্তু একমাত্র আল্লাহই ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানেন। তবে, অবশ্যই সতর্ক বিশ্বাসী বান্দা হিসাবে আমরা আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলোকে হাদিসের আলোকে বিশ্লেষণ করব এবং সজাগ দৃষ্টি রাখবো হাদিসে বর্ণিত মুসলিম ভূখণ্ড গুলোর বর্তমান প‌রি‌স্থি‌তির উপর। কারন ইতিমধ্যেই হাদিসে উল্লেখিত সব এলাকাতেই কুফফারদের সাথে মুজাহিদদের লড়াই চলছে। আর হা‌দি‌স বি‌শ্লেষন ক‌রে অ‌নেক মুহা‌দ্দিসগনই বল‌ছেন হয়‌তো ইমাম মাহদির জন্ম হ‌য়ে গে‌ছে। কোন জিহাদরত দ‌লে অপ‌রি‌চিত সাধারন মুজা‌হিদ অবস্থায় আ‌ছেন। (আল্লাহই তা ভা‌লো জা‌নেন)
.
তাই বিজয় খুব সন্নিকটে ইনশাআল্লাহ।

This entry was posted in Uncategorized. Bookmark the permalink.

Leave a comment