যে সকল কারনে ইমান নষ্ট হয় বা মানুষ ইমানদার থেকে কাফিরে পরিনত হয় সে সব কারনের মধ্যে দশটি কারন নিম্ন রুপঃ

iman
১, আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ …নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই। [সুরা মাইদাঃ৭২]
মৃত ব্যক্তির কাছে কিছু চাওয়া বা তাদের সাহায্য কামনা করা অথবা তাদেরকে উপহার দেওয়া ভেট দেওয়া এগুলো সবই শিরক এর অন্তর্ভুক্ত ।
২, আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে মধ্যস্ততাকারি রূপে কাউকে স্থাপন করা বা কাউকে মধ্যস্ততা কারি মনে করা। এবং তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া , তাদেরকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা কুফর।
৩, যদি কোন ব্যক্তি মুশরিকিনদের কাফের মনে না করে অথবা তাদের কাফের হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে অথবা মুশরিকিনদের পথকেই সঠিক পথ বলে মনে করে তাহলে উক্ত ব্যক্তি কাফির বলে গন্য হবে।
৪, যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর দেখানো পথ বা সিদ্ধান্তের চেয়ে অন্য কোন পথ নির্দেশনা অথবা সিদ্ধান্তকে বেশি উত্তম মনে করে তাহলে সেই ব্যক্তি কাফির বলে গন্য হবে। এটা তাদের জন্যেও প্রযোজ্য যারা তাগুতের আইনকে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে প্রেরিত শরিয়া আইনের থেকে বেশি উত্তম মনে করে। উদাহরন সরূপ বলা যায়ঃ
মানুষের তৈরি আইনকে আল্লাহর প্রদত্ত শরিয়া আইনের চেয়ে উত্তম মনে করা
এই বিংশ শতাব্দিতে ইসলামি শাসন ব্যবস্থাকে অচল মনে করা। অথবা ইসলামকেই মুসলমানদের পিছিয়ে পরার কারন মনে করা অথবা এই মনে করা যে ইসলাম মানে শুধু আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন এছারা সর্বক্ষেত্রে ইসলামের কোন প্রয়োজন নেই।
অন্যায়ের জন্যে আল্লাহ যে সকল শাস্তির বিধান দিয়েছেন (উদাহরনঃ চুরি করলে হাত কেটে দেওয়া) সেগুলোকে এই সময়ের জন্যে অচল মনে করা
মদ , সুদ , জিনা – ব্যভিচারের মত আল্লাহর তরফ থেকে সরাসরি হারাম কাজ গুলোকে হালাল মনে করলেও মানুষ কাফির হয়ে যায়।
৫, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যে সকল কাজ করার হুকুম দিয়েছেন যদি কোন ব্যক্তি সে সকল কাজের একটি কেও ঘৃণা করে তাহলে তার ইমান নষ্ট হয়ে যাবে।
আল্লাহ বলেনঃ এটা এজন্যে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব, আল্লাহ তাদের কর্ম ব্যর্থ করে দিবেন। [সুরা মুহাম্মাদঃ ৯]
৬, কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহ যা নাজিল করেছেন সেই বিষয় সমূহ নিয়ে ঠাট্টা- উপহাস করে এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যে শাস্তি এবং পুরষ্কারের কথা বর্ননা করেছেন সেগুলোকে অবিশ্বাস করে এবং হাসির খোরাক মনে করে তাহলে তাদের ইমান ধ্বংস হয়ে যায়।
আল্লাহ বলেনঃ “…তারা বলবে, আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার পর।…” [সুরা তাওবাঃ৬৫-৬৬]
৭,যাদু টোনা করা এক ধরনের কুফরি করা। উদাহরন সরূপঃ যাদুর মাধ্যমে কোন ব্যক্তি দ্বারা এমন কাজ করিয়ে নেয়া যা সে নিজের ইচ্ছায় করতে চায় না। অথবা সামি স্ত্রি এর মধ্যে যাদুর মাধ্যমে সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট করা ইত্যাদি। যে কেউ এধরনের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকবে সে ইসলাম থেকে বেড় হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেনঃ “…তারা উভয়ই (হারুত ও মারুত) একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না…” [সুরা বাকারাঃ১০২]
৮, মুসলমানদের বিপক্ষে মুসরিকদের সহায়তা করলেও ইমান ধ্বংস হয়ে যায়।
আল্লাহ বলেনঃ “…তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।” [সুরা আল মাইদাঃ৫১]
৯, যদি কোন ব্যক্তি এমন বিশ্বাস রাখে যে পৃথিবীতে কিছু ব্যক্তির আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলের প্রনিত আইন ভঙ্গ করার এখতিয়ার রাখে তাহলে সেই ব্যক্তির ইমান নষ্ট হয়ে যাবে এবং সে কাফির বলে বিবেচিত হবে। আল্লাহ বলেনঃ “যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।” [সুরা আলি ইমরানঃ ৮৫]
১০, আল্লাহ প্রদত্ত এই দ্বীন ইসলামকে উপেক্ষা করে এই দ্বীনের দিকে সম্পুর্ন পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে , দ্বীনের সম্পর্কে জানার পর তা সম্পূর্ন অবগ্যা করলে তার ইমান নষ্ট হয়ে যায়।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেনঃ “যে ব্যক্তিকে তার পালনকর্তার আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশ দান করা হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে যালেম আর কে? আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব।” [সুরা আস-সাজদাঃ২২]
সুতরাং এই আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি বিশেষ কোন পরিস্থিতি ব্যতীত (জীবনের নিরাপত্তার ভয়) ,যদি কোন মুসলমান নাম ও লেবাস ধারি কোন ব্যক্তির মধ্যে উপরে উল্লেখিত বৈশিষ্ট সমূহের কোন একটি পরিলক্ষিত হয় তাহলে তার ইমান নষ্ট হয়ে যাবে এবং সে ইসলাম হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
আল্লাহ আমাদেরকে এই ভয়ংকর পরিনতি থেকে রক্ষা করুক এবং আমাদেরকে মুমিন হিসেবেই মৃত্যু দান করুক। আমিন।

This entry was posted in Uncategorized. Bookmark the permalink.

Leave a comment