ইসলাম ভঙ্গের কারনসমুহ !!!

Iman-Vonger-Karon

অজু ভঙ্গের কারন জানি, নামাজ ভঙ্গের কারন জানি, ইসলাম ভঙ্গের কারন আমরা অনেকেই জানিনা। আসুন জেনে নিই ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয়সমূহ কি কি ????

[ শাইখ জামিল যাইনুর ব্যাখ্যা সাপেক্ষে ইসলাম ভঙ্গের কারনসমুহ নিম্নরুপ:

  1. আল্লাহ ছাড়া ‍অন্য কারো নিকট দু’আ করা।
  2. রসূল (সা) অথবা কোন ওআলীর নামে যবেহ করা শির্ক ।
  3. কোন সৃস্টির উদ্দেশ্যে (নৈকট্য) লাভ ও ইবাদতের নিয়তে মান্নত করা। কারন মান্নত একমাত্র আল্লাহর জন্যই করা যাবে।
  4. নৈকট্য লাভ ও ইবাদতের নিয়তে কোন কবরের চতুর্পাশে প্রদক্ষিন বা তওয়াফ করা। এটা শুধু কা’বা শরীফের জন্য নির্দিস্ট।
  5. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপর তাওয়াক্কুল ও ভরসা করা।
  6. জেনে বুঝে কোন রাজা বাদশাহ বা সম্মানিত কোন জীবিত বা মৃত ব্যক্তিকে ইবাদতের নিয়তে রুকু বা সিজদা করা। কেননা রুকু ও সিজদা একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত ইবাদাত।
  7. ইসলামের পরিচিত ভিত্তি সমূহ হতে কোন ভিত্তিকে অস্বীকার করা । যেমন: সালাত, যাকাত, ছওম ও হাজ্জ।
  8. ইসলামকে ঘৃণা করা, অথবা তার কোন শিক্ষাকে ঘৃণা করা চাই তা ইবাদতের ক্ষেত্রেই হউক অথবা মুআমেলাত (আদান প্রদান) বা অর্থনৈতিক কিংবা চরিত্রগত বিষয়ের ক্ষেত্রে হোক।
  9. ঠাট্টা বিদ্রুপ করা। কুরআন এর কোন অংশ অথবা হাদীসের বিশুদ্ধতা এবং তার নির্দেশনা-যার উপর বিদ্যানগণ ঐক্যমত হয়েছে কিংবা ইসলামের কোন সর্বসম্মত হুকুম আহকামকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করা।
  10. জেনে শুনে ইচ্ছাকৃতভাবে কুরআনের কিংবা সর্বসম্মত বিশুদ্ধ হাদীছের কোন অংশ বা তথ্যের অস্বীকৃতি ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়া অপরিহায্য করে।
  11. মহান প্রতিপালককে গালি-গালাজ বা ভৎর্সনা করা অথবা দ্বীনকে অভিশাপ দেয়া। রসূল (সা) কে গালি দেয়া অথবা তার কোন অবস্থা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করা কিংবা তার আনিত বিধান এর সমালোচনা করা। এই সমস্ত কাযর্সমুহের কোন একটি যে কেউ করলে সে কাফির হয়ে যাবে।
  12. আল্লাহর পবিত্রতম সুন্দর নাম সমূহ অথবা তার অতি উত্তম গুণাবলিসমূহ বা কাযর্সমূহ যা কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে তা ‍অজ্ঞতা এবং ভূল ব্যাখ্যা ব্যতীত অস্বীকার করা।
  13. সমস্ত রসূলগনের উপর ঈমান না আনা- যাদেরকে আল্লাহ রব্বুল আলামীন মানুষের হেদায়েতের জন্য প্রেরণ করেছেন। অথবা তাদের কাউকে তুচ্ছ ধারণা করা।
  14. আল্লাহ তায়ালার প্রবর্তিত বিধান ব্যতীত অন্য কোন বিধান দ্বারা বিচার করা:যদি এই ধারণা করে যে, এই যুগে ইসলামের নীতি উপযোগী নয় অথবা মানব রচিত আইনকে জায়েয মনে করা।
  15. ইসলাম বহিভূর্ত আইনে বিচার প্রার্থী হওয়া ও ইসলামী বিচারে সন্তুষ্ট না হওয়া। ইসলামী বিচারে অন্তরে গভীর সংকোচ বোধ করা ও কষ্ট পাওয়া।
  16. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো হাতে শরঈ আইন ও বিধান প্রবতর্নের ক্ষমতা প্রদান করা। ইসলামী আইনের সাথে সাংঘর্ষিক কোন আদর্শকে সঠিক বলে মেনে নেয়া। যথা: একনায়কতন্ত্র ‍পাশ্চাত্য গণতন্ত্র ইত্যাদি।
  17. আল্লাহ কতৃর্ক বৈধকৃত বিষয়-বস্তুকে অবৈধ করা বা ‍অবৈধ বিষয়কে বৈধ করা।যেমন: যিনাকে বৈধ করা অথবা সুদকে বৈধ বলা ভূল ব্যাখ্যা ব্যতীত।
  18. ধ্বংসাত্বক মতবাদ এর উপর ঈমান আনা বা বিশ্বাসী হওয়া যথা: নাস্তিক্যবাদ, ইয়াহুদীবাদ,মাসুনীয়া, মাকর্সবাদী সমাজতন্ত্র। ধমর্হীনতা,ধমর্র্নিরপেক্ষবাদ,জাতীয়তাবাদ যা আরবের অমুসলিমদেরকে অনারব (আজম) মুসলিমদের উপর প্রাধান্য দেয়া (অনুরুপভাবে বর্ণবাদও)।
  19. দ্বীনের পরিবর্তন করা এবং ইসলাম ছেড়ে অন্য কোন ধর্মে দীক্ষা গ্রহন করা।
  20. ইয়াহুদী, খৃষ্টান অথবা নাস্তিকদেরকে মুসলিমদের ‍বিরুদ্ধে সাহায্য সহযোগীতা করা।
  21. ঐ সমস্ত নাস্তিক যারা আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে অথবা ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান যারা রসূল (সা) এর উপর ঈমান আনেনি তাদের কাফির না বলা। কেননা আল্লাহ তাআলা তাদের কাফির বলে আখ্যা দিয়েছেন।
  22. কিছু কিছু সুফীবাদী বা পীরেরা ওয়াহদাতুল ওয়াজুদ (সবের্শ্বরবাদ) এর প্রবক্তা যার মর্ম হলো জগতে আল্লাহ ছাড়া কিছুই নেই (অর্থ্যৎ জগতে যা কিছূ রয়েছে সবই আল্লাহ) এমনকি তাদের সর্দার একজন বলেছে কুকুর ও শুকুর সবই আমাদের ইলাহ, মাবুদ ছাড়া আর কিছুই নয়। সে আরও বলেছে গীর্জার পাদ্রী আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নয়। তাদের সর্দার মানছুর হালাজ বলেছিল, আমিই তিনি তিনিই আমি। ফলে আলিমরা তাকে হত্যার নিদের্শ দেন এবং তাকে হত্যা করা হয়।
  23. দ্বীনকে রাষ্ট্রীয় বিষয় হতে পৃথক করা, অথবা এ কথা বলা যে, ইসলামে রাজনীতি নেই। কেননা এতে কুরআন, হাদীছ এবং রসূল (সা) এর জীবনাদর্শকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়।
  24. কতক সূফীদের কথা: আল্লাহ রব্বুল আলামিন দুনিয়া পরিচালনার চাবি কিছূ কিছু ‌আউলিআদের হাতে অর্পন করেছেন যাদের কুতুব বলা হয়।এ ধারনা অবশ্যই আল্লাহর কার্যাবলীর মধ্যে শিরক বলে পরিগণিত
  1. নিশ্চয়ই এসব ইসলাম ভঙ্গকারী কারণসমূহ অযু ভঙ্গকারি কারণ সমূহের মত। তাই যদি কোন মুসলিম এগুলোর কোন একটিও বিশ্বাস করে কিংবা আমল করে তবে তার নতুন করে ইসলাম গ্রহণ করতে হবে এবং উক্ত কমর্কে ত্যাগ করতে হবে। আর মৃত্যুর পূর্বেই আল্লাহর নিকট তাওবা করতে হবে যদি তাওবা না করে তবে আমালসমূহ নষ্ট হয়ে ‍যাবে এবং সে জাহান্নামের চিরস্থায়ী অধিবাসী হবে।

এ সব ইসলাম বিনস্টকারী বিষয়গুলি অত্যন্ত ভয়াবহ এবং সচরাচরই ঘটে থাকে। মুসলিমদের উচিত এগুলো থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা। যে সব কাজ আল্লাহর ক্রোধ এবং তারঁ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিকে অপরিহার্য করে দেয় সেগুলো থেকে আমরা আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।

জ্ঞাতব্য: [ইসলাম ভঙ্গের কারনগুলোর মধ্যে একটি বা একাধিক কারণ কারো নিকট পাওয়া গেলেও তাকে কাফির বলা যাবে না যতক্ষণ কাফির হওয়ার শর্তাবলী ও প্রতিবন্ধকের অনুসন্ধানি না করা হবে। অন্যথায় কাফির বলার দায়ভার যে ব্যক্তি বলবে তার উপরই বর্তাবে।] ] [ কালিমার মর্মকথা-পৃষ্ঠা-২৩৩-২৪১- শাইখ জামিল জাইনুর ব্যাখ্যা—আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম ]

1 Response to ইসলাম ভঙ্গের কারনসমুহ !!!

  1. জাগো মুসলিম says:

    শাইখ জসিম উদ্দিন রহমানীর সকল অডিও ভিডিও বই একটি ওয়েবসাইট করতে চাই কি ভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করবো জানান।

    Like

Leave a comment